আজ মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর, ২০২২) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো'র (বিবিএস) অডিটোরিয়ামে ‘কৃষি শুমারি ২০১৯’ এর রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। শুমারি রিপোর্ট প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব এম.এ.মান্নান এমপি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. শামসুল আলম, মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. শাহনাজ আরেফিন এনডিসি, সচিব, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক জনাব মো. মতিয়ার রহমান। অনুষ্ঠানে কৃষি শুমারির সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনা করেন প্রকল্প পরিচালক জনাব আলাউদ্দিন আল আজাদ।
অর্থনীতির খাতগুলোর মধ্যে কৃষি অন্যতম। দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা কৃষির উপর নির্ভরশীল। কাজেই, কৃষি খাতের উন্নয়ন মানে সমগ্র দেশেরই উন্নয়ন। কৃষি খাতের সঠিক উন্নয়ন পরিকল্পনার পূর্বশর্ত হলো সময়োপযোগী এবং বাস্তবসম্মত পরিসংখ্যান প্রণয়ন করা। জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা (এনএসও) হিসেবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশের সরকারি পরিসংখ্যান সংগ্রহ, সংকলন এবং প্রকাশের দায়িত্বে নিয়োজিত একমাত্র প্রতিষ্ঠান।
শুমারি সাধারণত ১০ বৎসর অন্তর অনুষ্ঠিত হয়। কৃষি শুমারি এ ভুখন্ডে মূলত স্বাধীনতার পূর্বে ১৯৬০ সালে পরিচালিত হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম ১৯৭৭ সালে কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। এরপরবর্তী সময়ে ১৯৮৩-৮৪ সালে দুই বছরে দুই ভাগে পৌর এলাকাসহ সকল কৃষি খানায় শুমারি পরিচালনা করা হয়। ১৯৯৬ সালে কৃষি শুমারিতে শুধুমাত্র পল্লি এলাকায় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ২০০৮ সালে সমগ্র দেশে শহর ও পল্লি এলাকায় সকল সাধারণ খানায় তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে শুমারি পরিচালনা করা হয়। সারাদেশে ০৯ জুন হতে ২০ জুন ২০১৯ সালে ৫ম কৃষি শুমারি পরিচালিত হয়। কৃষি শুমারি হতে কৃষি জমির পরিমাণ, মালিকানা, সেচ ব্যবস্থা, আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ, ভূমির ব্যবহার, হাঁস-মুরগির ও গবাদিপশুর সংখ্যা ইত্যাদির তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
কৃষি শুমারির প্রাপ্ত তথ্য হতে দেখা যায় যে, ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত কৃষি শুমারি অনুযায়ি ৩ কোটি ৫৫ লক্ষ ৫২ হাজার খানা যা ২০০৮ সালে ছিল ২ কোটি ৮৬ লক্ষ ৯৫ হাজার। এ শুমারিতে প্রাপ্ত মোট কৃষি খানার সংখ্যা ১ কোটি ৬৮ লক্ষ ৮১ হাজার যা ২০০৮ সালের শুমারিতে ছিল ১ কোটি ৫১ লক্ষ ৮৩ হাজার। শুমারির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, দেশে সাধারণ খানার সংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে কৃষি খানা সে হারে বৃদ্ধি পায়নি। দেশে নিট আবাদী জমির পরিমাণ ১ কোটি ৮৬ লক্ষ ৮১ হাজার একর যার মধ্যে নিট অস্থায়ী ফসলের জমির পরিমাণ ১ কোটি ৬৪ লক্ষ ২৩ হাজার একর এবং স্থায়ী ফসলের জমির পরিমাণ ১৯ লক্ষ ৭০ হাজার একর। শুমারির প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, ২০০৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালের শুমারিতে আউশ ফসলের চাষের অধীন জমি কিছুটা হ্রাস পেলেও আমন, বোরো, আলু, গম, ভুট্টা, পাট ইত্যাদি ফসল চাষের অধীন জমির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ শুমারিতে ফসলের নিবিড়তা ২১৪ যা ২০০৮ সালে ছিল ১৭৩।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে গরু, মহিষ, ছাগল এবং হাঁস-মুরগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি শুমারি ২০১৯ এ প্রাপ্ত মোট গরুর সংখ্যা ২ কোটি ৯৪ লক্ষ ৫২ হাজার যা ২০০৮ সালের শুমারিতে ছিল ২ কোটি ৫৬ লক্ষ ৭৮ হাজার। একইভাবে এ শুমারিতে প্রাপ্ত মোট ছাগলের সংখ্যা ১ কোটি ৯৪ লক্ষ ৪৪ হাজার যা 2008 সালের শুমারিতে ছিল ১ কোটি ৬৩ লক্ষ ১৮ হাজার। এ শুমারিতে মোট মোরগ-মুরগীর ও হাঁসের সংখ্যা যথাক্রমে ১৯ কোটি ৯৪ লক্ষ ৩ হাজার ও ৭ কোটি ৪৪ লক্ষ ৯৩ হাজার যা ২০০৮ সালের শুমারিতে ছিল যথাক্রমে ৯ কোটি ৭৮ লক্ষ ১০ হাজার ও ৩ কোটি ৯৪ লক্ষ ৩৩ হাজার। কৃষি শুমারি ২০১৯ এ মোট মৎস্য চাষাধীন জমির পরিমাণ ১২ লক্ষ 12 হাজার 107 একর। ব্যবহার ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায় পুকুরে মাছ চাষ জমির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ৬ লক্ষ ৮১ হাজার একর।
ছবি
ছবি
ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
28/12/2022
আর্কাইভ তারিখ
24/12/2054
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস